বুধবার , ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জাতীয়

আগামীকাল থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলো

 

রকিব উদ্দিন রকি, রাঙামাটি: দীর্ঘ ২৪ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামীকাল শুক্রবার থেকে রাঙামাটি পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। ইতি মধ্যে পর্যটক বরণে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পর্যটক হলিডে কমপ্লেক্স ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা। আজ বৃহস্পতিবার ৩১অক্টোবর ২৪দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এর আগে জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে  রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং পাহাড়ে সহিংতা সংঘাতে গত জুলাই হতে অক্টোবর পর্যন্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় পর্যটন খাতে শতকোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা।

গত ৮ অক্টোবর রাঙামাটি জেলা প্রশাসন এক নোটিশে রাঙামাটি জেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত নোটিশ জারি করা হয়। এর আগে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালি সহিংস ঘটনা ও অগ্নিসংযোগ ভাংচুর ঘটনার পর অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটন ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়। জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত দেশের চলমান পরিস্থিতি  আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত সবকিছু মিলে প্রচন্ড প্রভাব পড়েছে পর্যটন শিল্পের উপর। জুলাই,আগষ্ট,সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর  এই ৪মাসে তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটন খাতে ধন নেমে এসেছে। বিরাট ক্ষতির স্মূখিন হতে হয়েছে ব্যবসায়িদের। যদিও পর্যটন ব্যবসায়িরা মূখ খুলে তাদের সম্পূর্ণ ক্ষতির কথা শিকার করছে না। তবে ক্ষতির পরিমান কয়েকশ’ কোটি টাকা হবে।

গত জুলাই –আগষ্টের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং রাঙামাটিতে পাহাড়ি বাঙালি সহিংসতা সংঘাতে রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে। পর্যটক রিলিটেড সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্যে  বিরুপপ্রভাব পড়েছে। এতে কয়েকশ কোটি টাকার লোসসান হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে নভেম্বর মাসে প্রথম সপ্তাহ হতে প্রচুর পর্যটক আসবে বলে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়িরা ধারনা করছে। আর কোন ধরনের ঝামেলা না হলে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আশা করেন তারা।

রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ন সম্পাদক মোস্তাফা কামাল উদ্দিন বলেন, গত জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি পাহাড়ি বাঙালি সংঘাত সবকিছু মিলে পর্যটন ব্যবসায় চমে লোকসান হয়েছে ব্যবসায়িদের। পর্যটন ব্যবসার সাথে রিলিটেড অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য। পর্যটন ব্যবসা না হলে বা পাহাড়ে পর্যটক না আসলে এখানকার সব ধরনের ব্যবসায় লোকসান গুনতে হয়। রাঙামাটি পর্যটক শূন্য হলে মানুষের রুটি রোজগার বন্ধ হয়ে যায়।তাই এখানকার স্থানীয় প্রশাসন সব কিছু ভেবে চিন্তে ও সকল স্টেক হোল্ডারদের মতামত নিয়ে পর্যটনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ জানান।

আবাসিক হোটেল স্কয়ারের মালিক মোঃ শাহনেওয়াজ বলেন, দীর্ঘ দিন পর্যটক আসা বন্ধ থাকার পর কাল শুক্রবার থেকে নিষেধাজ্ঞা খুলে দেওয়া হচ্ছে। আশা করি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ হতে পর্যটক আসা শুরু করবে। গত ৪মাস আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল না। যদি আগামীতে পরিবেশ পরিস্থিতি ভাল থাকে তাহলে মনে হয় লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবো। আমার মনে হয় পৃথিবীর কোথায় এভাবে পর্যটন স্পট বন্ধ রাখা হয়নি। ২৪ দিন বন্ধ রাখার তেমন কোন কারন ছিলনা। যাক আমরা পর্যটক আগমনে হোটেল-মোটেল সাজিয়ে গুজিয়ে রেখেছি। গত কাল থেকে কিছু কিছু বুকিং হচ্ছে।

রাঙামাটি হলিডে কমপ্লেক্সের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা ক্যাচিং মারমা বলেন, গত জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য তেমন ভাল না। গত ২৪ দিন পর্যটক নিরুৎসাহিত করায় পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের প্রায় ১-দেড় কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। গতকাল থেকে বুকিং হচ্ছে, আশা করছি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটবে।


সম্পর্কিত খবর