বুধবার , ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জাতীয়

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সাফল্যে উচ্ছ্বাসে ভাসছে রাঙামাটির ঋতুপর্ণা ও রুপনার গ্রাম

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সাফল্যে উচ্ছ্বাসে ভাসছে রাঙামাটির ঋতুপর্ণা ও রুপনার গ্রাম

রকিব উদ্দিন রকি, রাঙামাটি: বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বিজয়ে রাঙামাটির ঋতুপর্ণা চাকমা ও রুপনা চাকমার পরিবার এবং গ্রামবাসীর মধ্যে খুশির জোয়ার বইছে। ঋতুপর্ণা (২২) এবং রুপনা (২১) দুজনেই তাদের গ্রামের গর্ব, যাদের কঠিন সংগ্রামের গল্প আজ দেশজুড়ে আলোচিত।

কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মগাইছড়ি গ্রামের বাসিন্দা ঋতুপর্ণা এবং নানিয়ারচর উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি গ্রাম ভুয়ো আদামের রুপনা ছোটবেলা থেকেই অর্থকষ্টে বড় হয়েছেন। ঋতুপর্ণা ও রুপনার বাবারা অনেক আগেই মারা গেছেন, ফলে তাদের পরিবারকে মায়েদের কঠোর পরিশ্রমে জীবনধারণ করতে হয়েছে। কিন্তু এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তারা নিজেদের প্রতিভা ও দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলে জায়গা করে নিয়েছেন। তাদের এই সাফল্যে পুরো রাঙামাটি গর্বিত।

ঋতুপর্ণার মা বসুমতি চাকমা জানান, ঋতুপর্ণার বাবা ব্রজবাঁশি চাকমা ২০১৫ সালে মারা যান। তিনি বলেন, এক ভাই ও চার বোনের মধ্যে ঋতুপর্ণা চতুর্থ। তার একমাত্র ভাই বিদ্যুস্পৃষ্টে মারা গেছে। আজ ঋতুপর্ণার এই কৃতিত্ব আমাদের পরিবারকে নতুন করে আশার আলো দেখিয়েছে। তার সাফল্য দেখে আমি খুব আনন্দিত।

রুপনার মা কালা সোনা চাকমা বলেন, রুপনা শুধু আমার মেয়ে নয়, সে এই দেশের মেয়েও। তার সাফল্যের পেছনে যারা আছেন, আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। রুপনাই এখন আমার সব। গতবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর সরকারের সহায়তায় তাদের একটি সেমি-পাকা ঘর তৈরি করা হয়েছে।

রাঙামাটির ঘাগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্রা দেওয়ান জানান,ঋতুপর্ণা ও রুপনার সাফল্যে আমরা গর্বিত। তাদের জন্য আমরা সংবর্ধনার আয়োজন করব। এছাড়া, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ঋতুপর্ণা ও রুপনার জন্য পুরো জাতি গর্বিত। তারা বাড়ি ফিরলে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হবে।

এ বছর নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। রাঙামাটির ঋতুপর্ণা এবারের সেরা ফুটবলারের খেতাব জিতেছেন, আর সেরা গোলরক্ষকের খেতাব এসেছে রুপনার হাতে।


সম্পর্কিত খবর