নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত আটকিয়ে পুণরায় বদলীর জন্য চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন মোঃ মনছুরুল হক। সে বর্তমানে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ষ্টোর কিপার (ভান্ডার রক্ষক) পদে কর্মরত আছেন।
জানা যায়, মনছুর আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বদলীর আদেশ অমান্য, হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতি এবং প্রভাব বিস্তার সহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্মারক নং-সিএসসি/শা-৬/তদন্ত কমিটি/২০২৪/১৯৩৬ গত ২ জুন ২৪ইং মূলে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. ওয়াজেদ চৌধুরী-কে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত তদন্ত কমিটি কয়েক ধাপে তদন্ত পূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন সাবেক সিভিল সার্জনের নিকট দাখিল করা হলে তার স্বাক্ষরিত সিএসসি/শা-৬/২০২৪/২৬২৫ তারিখঃ ৮ আগষ্ট ২০২৪ইং মূলে প্রশাসনিক কারনে তাকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সীতাকুন্ডে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলীর আদেশ প্রদান করে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরোও জানা যায়, মনছুরের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকার স্মারক নং-স্বাঃ অধিঃ/প্রশা-৩/বদলী কমিটি-৫৫০/১৯/৭০৮৩ তারিখঃ গত ২ অক্টোবর ১৯ইং মূলে প্রশাসনিক কারনে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পটুয়াখালীতে বদলী করা হয়।
উক্ত বদলীর আদেশ অমান্য করে যোগদান না করা সহ নানাবিধ অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বাঃ অধিঃ/শৃংঙ্খলা-১৮৪/২০২২/২৪৩১ তারিখঃ ৬ আগষ্ট ২৪ইং মূলে পরিচালক (প্রশাসন) ও সহকারী পরিচালক (শৃঙ্খলা), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বাক্ষরিত সিভিল সার্জন চট্টগ্রাম বরাবর পত্র প্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে আনীত অভিযোগ সমূহ প্রমানিত/ প্রমানিত নয় মর্মে সুষ্পষ্ট মতামত সহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তারিই পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন সংযুক্তিতে কর্মরত প্রধান সহকারী মফিজুল আলম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রেরন না করে আটকিয়ে রাখেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী জানান, অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় প্রশাসনিক কারনে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী হওয়া মনছুরুল বিগত ১১ আগষ্ট, ২০২৪ইং তারিখ সীতাকুন্ডে যোগদান পরবর্তী কয়েক দিনের মধ্যে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলীর জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে ফরওয়ার্ডিং গ্রহন করেন। বর্তমানে প্রশাসনিক কারনে বদলী হওয়া ষ্টোর কিপার ৩ মাসের কম সময়ে পুণরায় তার পাশ্ববর্তী উপজেলা চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলী হওয়ার জন্য চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিভিন্ন ভাবে লবিং ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। তাছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে যেহেতু সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে সুস্পষ্ট মতামত না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত ষ্টোর কিপার মনছুর’কে পুণরায় চাহিত আবেদন মোতাবেক বদলী করা উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাকে উপেক্ষা করা বলে মনে করেন।
এই বিষয়ে আরো জানা যায়, প্রশাসনিক কারনে বদলী হওয়া মাত্র ৩ মাসের কম সময়ে যদি সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে পুণরায় চাহিত আবেদন মোতাবেক বদলী করে পুরস্কৃত করা হয় তাহলে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতি চলতে থাকবে এবং প্রশাসনে অস্থিরতা বড়বে।
এই ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ও তার মোবাইল ফোন টি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।