কিশোরীর সম্ভ্রম ৬০ হাজার টাকা!
টেকনাফ ভিশন ডেস্ক :
টেকনাফে সাড়ে ১৫ বছরের কিশোরীকে বিয়ের আশ্বাসে ৩ বছর ধরে স্বামী-স্ত্রীর মত শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে ৬০ হাজার টাকায় শালিসি বৈঠক স্টাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে মিটমাট করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় মিটমাট করার দু মাসের মাঝে আবার ১১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে সাবরাং করাচি পাড়া এলাকায় কিশোরীর ঘরে ঢুকে ওই কিশোরীকে যৌন নির্যাতন ও মারধরের এবং ১২ ডিসেম্বর সাবরাং কোয়াইনছড়ি পাড়ার উক্ত যুবকের বাড়িতে হামলার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে অভিযুক্ত শহিদুল্লাহর সাথে মোবাইল সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিশোরী ২৮ বছরের যুবক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এতে সাবরাং কোয়াইনছড়ি পাড়ার যুবক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ (২৮), তার ভাই রাহামত উল্লাহ (৩২), বোন রোজিনা আকতার (৩০) ও পিতা আলী আহম্মদ (৬০) কে বিবাদী করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, উপরোক্ত ১নং বিবাদী মোঃ শহিদ উল্লাহ বিগত অনুমান ৩ বৎসর পূর্বে বাড়ীর আশে পাশে ঘোরা ফেরা করে। এই সুযোগে সে আমাকে ঘরের বাহিরে দেখিয়া সু-কৌশলে আমার সহিত দেখা করে এবং আমাকে বিয়ে করবে আশ্বাস দিয়া শপথ বাক্য পড়ে বিশ্বাস জন্মায়। এর মধ্যে দুজনের মধ্যে প্রেম বিনিময় চলে আসছিল। এই সুযোগে বিবাদী আমাকে বিভিন্ন সময়ে স্বামী স্ত্রী”র মত শারীরিক ভাবে মেলামেশা করে আসতেছিল । সম্প্রতি বিবাদীকে অঙ্গীকার মতে বিয়ে করার জন্য চাপা- চাপি করলে আজ কাল করে তালবাহানা করতে থাকে । ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বর দিবাগত রাত্রে ঘরের ভিতর নিজ শয়ন কক্ষে ঘুমন্ত অবস্থায় ভোর রাত অনুমান ২ টার সময় শহিদ উল্লাহ কৌশলে ঘরের দরজা খুলে শয়ন কক্ষে ঢুকে ওই সাড়ে ১৫ বছরের কিশোরীকে চেপে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর অংশে যৌন পীড়ন করতে থাকে। উক্ত কিশোরী এ সময় শহিদ উল্লাহকে ধরে শোর চিৎকার শুরু করে। এতে এক পর্যায়ে কিল, ঘুষি মেরে এবং কিশোরীর বৃদ্ধ বাবা ও মা কে ধাক্কা দিয়ে ঘর হতে বের হয়ে যায়।
তবে এ সময় ফেলে যাওয়া ১ জোড় স্যান্ডেল, ১টি জাকেট, ১টি চাকু ও ১টি টর্চ লাইট পাওয়া যায়। এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বারকে অবগত করা হয়। বিবাদী জানতে পেরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কিশোরীকে কল করে তাকে তার বাড়ীতে চলে গেলে আপোষে বিয়ে করার আবারও অঙ্গীকার করে। তখন কিশোরী ১২ ডিসেম্বর সকাল অনুমান সাড়ে ৯ টার সময় বিবাদীদের বাড়ীতে চলে যায়। তখন উপরোক্ত অন্যান্য বিবাদীরা আলাপ-আলোচনা করে মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর সাথে বিয়ের আয়োজন করে দিবে বলে আশ্বাস দেয়। কিন্তু সকাল ১১ টার সময় বিবাদীরা ফের আলাপ আলোচনা করে আমাকে ঘর হতে বের হয়ে যেতে বলে। এতে কিশোরী জবাবদিহী করলে উপরোক্ত ২ নং হতে ৪নং বিবাদী লাঠি সোটা দিয়ে কিশোরীকে হাতে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে গুরুতর জখম করে। এ সময় কিশোরী ৯৯৯ এ অভিযোগ দিলে সংবাদ পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের নির্দেশে পুলিশ সাবা ইনস্পেক্টর সঞ্জীব পাল বিবাদীদের বাড়ীতে এসে গুরুতর জখম অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করে।
এবং পরে টেকনাফ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় গত ১৪ ডিসেম্বর টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন কুল-কিনারা হয়নি উক্ত কিশোরীর। তবে উক্ত কিশোরীকে উদ্ধারকারী টেকনাফ মডেল থানার এসআই সঞ্জীব পাল জানিয়েছেন এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্হা নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য এর আগে গত ৪ অক্টোবর মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ও উক্ত কিশোরীর মধ্যে ৬০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরন দিয়ে দফারফা করে স্হানীয় শালিসকারকরা। এতে কিশোরীর বয়স কম হওয়ায় বিয়ে করার আইনগত ভিত্তি নেই বলে আপোষ করে দেওয়া হলেও উক্ত যুবক আবার কিশোরীর ঘরে গিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে কিশোরী অভিযোগ করেছে।