শনিবার , ৪ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

আন্তর্জাতিক

সীমান্তের ২৭১ কি.মি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, তবে মিয়ানমার জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মি দু পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আমাদের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

oplus_2
সীমান্তের ২৭১ কি.মি আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে,
তবে মিয়ানমার জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মি দু পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আমাদের : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মোহাম্মদ শফিক ,টেকনাফ :
২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ স্হল ও নৌ পথে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের
সীমান্ত রয়েছে। দেশটা মিয়ানমার হলেও সীমান্ত এলাকা যার পুরোটাই ‘আরাকান আর্মির’ নিয়ন্ত্রণে, ফলে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হচ্ছে বাংলাদেশের। তাই মিয়ানমার জান্তা সরকার ও আরাকান আর্মি দুপক্ষের সাথে আমাদের সম্পর্ক বজায় রেখে এগুতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
৩০ ডিসেম্বর দুপুরে টেকনাফ সীমান্তের দমদমিয়া নাফনদীর অভ্যান্তরীণ নৌ চলাচল কতৃপক্ষের জেটির পল্টুনে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। এ সময় তিনি আরো বলেন , বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য সম্পন্ন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি ড. খলিলুর রহমানকে উপদেষ্টার মর্যাদায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি বিষয়টি সার্বক্ষণিকভাবে নজর রাখছেন। সীমান্ত এলাকায় আমাদের কোন সমস্যা নেই। বিজিবি সহ সকল বাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সর্তকতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে যেন আইন শৃঙ্খলা সব সময় স্বাভাবিক থাকে তার জন্য গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের জের ধরে ৫০ থেকে ৬০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা আমাদের দেশে অনুপ্রবেশের তথ্য স্বীকার করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন হয়নি। তাদের নতুন করে নিবন্ধিত করা হবে কি হবে না তা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত জরুরি। নতুন অনুপ্রেবশ করা রোহিঙ্গারা মানবিক সমস্যায় পড়ে এসেছেন। অনেকেই এসেছেন গুরুতর আহত হয়ে। ফলে তাদের ফেরত পাঠানোও খুবই জটিল হয়ে পড়েছে।
তিনি বেলা ১১ টার দিকে হেলিকপ্টার যোগে টেকনাফের বিজিবি ২ নম্বর ব্যাটালিয়ান সদরে অবতরণ করেন। সেখানে বিজিবি সদস্যদের সাথে আলাপ, পরিদর্শন শেষে তিনি যান দমদমিয়াস্থ নাফ নদীর মোহনায়। নদীর মোহনায় দাঁড়িয়ে সীমান্তের ওপারে দেখেন এবং কথা বলেন বিজিবি সহ বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। ব্রিফিং শেষ করে ফেরার সময় দাড়িয়ে থাকা শিশুদের সাথে ভাব বিনিময় করে চকলেট বিতরণ করেন উপদেষ্টা।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, টেকনাফ এবং টেকনাফের বদি মাদকের জন্য বিখ্যাত। এখানে মাদকের সমস্যা দীর্ঘ পুরাতন। নাফনদীর বাংলাদেশের অংশের জালিয়ারদিয়া চরে কিছু অপরাধী ছিল। যারা দীর্ঘদিন ধরে মাদক পাচারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করতো। বর্তমান সরকার আসার পর চর থেকে তাদের বিতাড়িত করা হয়েছে। মাদক পর্যায়ক্রমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। এর জন্য সীমান্তের সকল মানুষকে তথ্য প্রদান করে সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।
নাফনদীতে মাছ ধরা ও গবাদিপশুর করিডোর চালু বিষয়ে মিয়ানমারের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় গোলাগুলির শব্দ এপারে শোনা যায়। গোলা বারুদও এপারে এসে পড়ে। ফলে নাফনদীতে মাছ ধরা এখন নিরাপদ না। পরিস্থিতির উন্নত হলে এব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হবে। গরু আমাদানি বন্ধ থাকায় দেশের খামারিরা খুশি এবং পশু সংকটও নেই। পরিস্থিতির উন্নত হলে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করেই করিডোরের ব্যাপারে বলা যাবে।


সম্পর্কিত খবর